এনসিপির সঙ্গে একীভূত হচ্ছে গণঅধিকার পরিষদ ও আপ বাংলাদেশ
- আপলোড সময় : ২৩-০৯-২০২৫ ০৮:১৬:৩৬ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৩-০৯-২০২৫ ০৮:১৬:৩৬ পূর্বাহ্ন

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে একীভূত হচ্ছে গণঅধিকার পরিষদ এবং ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)। ইতোমধ্যে একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এ ব্যাপারে দল তিনটির মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা শেষ হয়েছে। তবে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কাকে কোন পদ দেওয়া হবে, সে বিষয়ে এখন দর-কষাকষি চলছে।
এখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। অন্যদিকে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং সাধারণ স¤পাদক হলেন রাশেদ খান। আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ এবং সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ হিজবুল্লাহ।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে এনসিপি। একইভাবে ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পথ ধরে গড়ে ওঠা গণঅধিকার পরিষদ ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। অন্যদিকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের নিয়ে চলতি বছরের ৯ মে গঠিত হয় ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)। আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস ও আদর্শিক মিল থাকায় তিন দলের মধ্যে বহু দিন ধরেই একীভূতের আলোচনা চলছিল।
দলগুলোর নেতাদের লক্ষ্য- তরুণ প্রজন্মের জন্য বিকল্প রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে সাম্প্রতিক সময়ে তারা সাংগঠনিকভাবে একাধিক বৈঠক ও মতবিনিময় করেছেন। একীভূতের প্রক্রিয়া নিয়ে যদিও উভয় পক্ষ আশাবাদী, তবে বড় জটিলতা তৈরি হয়েছে দলীয় নাম, কাঠামো ও নেতৃত্বের প্রশ্নে। কারা থাকবেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বে, কোন কাঠামোয় দল পরিচালিত হবে এবং নাম কী রাখা হবে- এসব প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত। তবে গত শনিবার এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ জানান, একীভূত হলেও এনসিপির নাম পরিবর্তনের কোনো পরিকল্পনা নেই। তার ভাষায়, ‘আমরা চাই অন্যান্য দল এনসিপির সঙ্গে যুক্ত হোক। তবে নাম পরিবর্তনের কোনো ইচ্ছা আপাতত নেই।’
সূত্র জানায়, দলগুলো একীভূত হলে এর প্রধান হিসেবে এনসিপির নাহিদ ইসলামই থাকছেন। অন্যদিকে গণঅধিকার পরিষদের শীর্ষ নেতা নুরুল হক নুরকে রাখা হতে পারে দলের দ্বিতীয় অবস্থানে অথবা একটি সম্মানজনক পদে রাখার আলোচনা আছে। তিন দলের আলোচনায় প্রস্তাব এসেছে শীর্ষ নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি পর্ষদ গঠনের। এর মধ্যে গণঅধিকার পরিষদ থেকে ৫ জন এবং এনসিপি থেকে ৫ জন অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারেন। এ পর্ষদ নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেবে এবং একীভূত দলের দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করবে।
সূত্রগুলো বলছে, একীভূত হলে দলটি ‘এনসিপি’ নামেই রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবে। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ স¤পাদক রাশেদ খান সম্প্রতি বলেছেন, রাজনীতিতে আলোচনা সব সময় হয়। এনসিপির অনেকেই ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে ছিলেন। সেই অভিজ্ঞতার কারণেই এখন আলোচনা চলছে- দেশ ও জাতির কল্যাণে কীভাবে একসঙ্গে কাজ করা যায়।
বর্তমানে দলগুলো নিয়মিত বৈঠক করছে এবং সাংগঠনিকভাবে সমন্বয়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। আগামী নভেম্বরের মধ্যেই এ বিষয়ে অগ্রগতি হতে পারে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে গণঅধিকার পরিষদ নেতৃত্বের প্রশ্নে কতটা ছাড় দিতে রাজি এবং এনসিপি তাদের অবস্থান কতটা নমনীয় করতে পারে।
গত শুক্রবার রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে প্রথমবারের মতো সারা দেশের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছে এনসিপি। দিনব্যাপী এই আয়োজনে অংশ নেন জেলা-উপজেলার সমন্বয়ক কমিটির প্রতিনিধি, এনসিপির যুব উইং যুব শক্তি, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংগঠনসহ দলটির অঙ্গসংগঠনের প্রতিনিধিরা।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সাংগঠনিক কার্যক্রম বেগবান করতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেনের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। এনসিপির রাজনৈতিক আদর্শ কেমন হবে, কীভাবে চলবে দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম তা দলীয় নেতাদের কাছে তুলে ধরেন নাহিদ ইসলাম-আখতার হোসেনরা। সভায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ